নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে দেয়ার ম্যাচে বাংলাদেশের যত রেকর্ড

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের বিপক্ষে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের জয় যেন আকাশ কুসুম কল্পনা। বছরের পর বছর ব্ল্যাকক্যাপসদের ডেরায় খেলেও ওয়ানডেতে জয়ের দেখা মিলছিল না। যার দেখা মিলেছিল চলতি সিরিজের প্রথম দুটি ওয়ানডেতেও। কিন্তু তৃতীয় ওয়ানডেতে যেন ভাগ্য বিধাতা চেয়ে দেখলেন টাইগারদের প্রতি। এতে করে তাসমান দ্বীপের দেশটিতে প্রথম জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।

আর কাঙ্ক্ষিত সেই জয়টি ধরা দিয়েছে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ১৯তম ওয়ানডেতে গিয়ে। যেখানে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেয়েছিল টাইগাররা। সে হিসাবে করলে কিউইদের মাটিতে এটি হবে টাইগারদের ২০তম ম্যাচ। তবে দেশের বাইরে যেসব জায়গায় বাংলাদেশ কমপক্ষে ২০টি ম্যাচ খেলেছে তার মধ্যে সবচেয়ে কম জয় নিউজিল্যান্ডেই।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) ভোর ৪টায় নিউজিল্যান্ডের নেপিয়ারে মাঠে নামে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড। তৃতীয় ওয়ানডেতে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে টাইগার বোলারদের দাপটে ৩১.৪ ওভারে মাত্র ৯৮ রানে অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৬ রান আসে উইল ইয়াংয়ের ব্যাট থেকে। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন তানজিম সাকিব, শরিফুল ইসলাম ও সৌম্য সরকার। জবাবে খেলতে নেমে এক উইকেট হারিয়ে ১৫ ওভার ১ বলে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ৫১ রান করে অপরাজিত থাকেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

এই ঐতিহাসিক ম্যাচে বেশ কয়েকটি রেকর্ড হয়েছে। আসুন দেখে নেই সেই রেকর্ডগুলো কি কি-

২০১৬ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে নেলসনে সবশেষ অলআউট হয়েছিল নিউজিল্যান্ড। সেবার তারা ২৫১ রান করে ৬৭ রানে জয় তুলে মাঠ ছেড়েছিল কিউইরা। তবে এবার আর সে সুযোগ হয়নি। উল্টো তারা হেরেছে ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে।

বাংলাদেশের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের সর্বনিম্ন স্কোর আজকের ৯৮ রান। এর আগের সর্বনিম্ন ছিল ১৬২ রান। যেটি ২০১৩ সালে হয়েছিল মিরপুরে। সব মিলিয়ে ওয়ানডেতে এ নিয়ে ৯ম বারের মতো ১০০-এর নিচে অলআউট হলো তারা। দেশের মাটিতে যা চতুর্থবার ও ২০০৭ সালের পর প্রথমবার।এর আগে দুই প্রতিপক্ষকে শতরানের আগে অলআউট করার কৃতিত্ব ছিল বাংলাদেশের। আজ তালিকায় যুক্ত হলো নিউজিল্যান্ডের নাম। বাংলাদেশ ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়েকে এবং ২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এর আগে শতরানের আগে অলআউট করার কৃতিত্ব দেখায়। দুটি ম্যাচের ভেন্যুই ছিল চট্টগ্রাম।

মাত্র দ্বিতীয়বার কোনো ওয়ানডেতে ১০ উইকেটই নিলেন কৃতিত্ব দেখাল বাংলাদেশের পেসাররা। আজ তানজিম সাকিব, শরিফুল ইসলাম ও সৌম্য সরকার নিয়েছেন ৩টি করে, ১টি মোস্তাফিজুর রহমান। এর আগে একমাত্র ঘটনাটি ছিল চলতি বছরের মার্চে সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। সেবার বাংলাদেশের হয়ে ১০টি উইকেট নিয়েছিলেন হাসান মাহমুদ (৫), তাসকিন আহমেদ (৩) ও ইবাদত হোসেন (২)।

১৪তম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে ৫০ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব দেখালেন পেসার শরিফুল ইসলাম। এ ক্ষেত্রে তিনি তৃতীয় দ্রুততম। এ মাইলফলক স্পর্শ করতে তার লাগল ৩৩ ম্যাচ। ২৭ ম্যাচে ৫০ উইকেট নিয়ে দ্রুততম রেকর্ডটি মোস্তাফিজুর রহমানের, যিনি ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন আবদুর রাজ্জাকের ৩২ ম্যাচের রেকর্ড।

ঘরের মাটিতে টানা ১৭ ওয়ানডে জেতার রেকর্ড নিয়ে নেপিয়ারে নেমেছিল নিউজিল্যান্ড, তাদের সামনে ছিল অস্ট্রেলিয়ার মাইলফলকটি স্পর্শ করার। কিন্তু ৯ উইকেটের বিশাল হারে ১৭ ম্যাচেই থামতে হলো তাদের। সবচেয়ে বেশি টানা ১৮ ম্যাচের জয়ের রেকর্ড অস্ট্রেলিয়ার। কিউইরা এর আগে দেশের মাটিতে সবশেষ হেরেছিল ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি, ভারতের কাছে ওয়েলিংটনে।

About RemixBd

Check Also

১০৬ বলে ১৯৯ রান, এনামুলের অবিশ্বাস ব্যাটিং!

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোট ফরম্যাট টি-২০। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে তা আরও ছোট হয়ে এসেছে টি-টেন। …