ওয়েন ডিলন পার্নেল (জন্ম ৩০জুলাই ১৯৮৯) একজন কিংবদন্তি দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার। দক্ষিণ আফ্রিকার পোর্ট এলিজাবেথে জন্ম। তিনি টেস্ট, একদিনের আন্তর্জাতিক এবং T20 আন্তর্জাতিকে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের সদস্য ছিলেন। যদিও তিনি দলে বাঁ-হাতি ব্যাট করেন, তিনি মূলত একজন বাঁ-হাতি মিডিয়াম-পেস বোলার। পার্নেল ২০০৭ সালে পোর্ট এলিজাবেথের গ্রে হাই স্কুলে যোগ দেন। তারপর ২০০৯ সালে নেলসন ম্যান্ডেল মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভর্তি হন।
তিনি স্থানীয় ক্রিকেটে ওয়ারিয়র্স এবং কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্টের হয়ে নিয়মিত ক্রিকেট খেলেন। তিনি দিল্লি ডেয়ারডে ভিলসের হয়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) অভিষেক করেন এবং পরে পুনে ওয়ারিয়র্সের হয়ে খেলেন। ২০১৪ আইপিএল নিলামে, তিনি আবার ১ লক্ষ টাকায় দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন।
সর্বপ্রথম ২০০৬ সালে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের দক্ষিণ আফ্রিকা দলের হয়ে খেলেন ওয়েন পার্নেল। এরপর ২০০৮ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মনোনীত হন তিনি। এই প্রতিযোগিতায় ওয়েন সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রহকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। গড়ে ৮.৩৮ রান দিয়ে ১৮ উইকেট লাভ করেছিলেন পার্নেল। কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৮ রানের বিনিময়ে ৬ উইকেটসহ ৫৭ রানের সর্বোচ্চ ইনিংস খেলেন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। পরের বছর ২০০৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওডিআই ও টোয়েন্টি২০ ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলের হয়ে তার অভিষেক ঘটে। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেট তার অভিষেক ঘটে।
২০১১ সালে পার্নেল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার ঘোষণা দেন। ধর্ম পরিবর্তনের পর তিনি নতুন নাম হিসেবে ওয়ালিদ নামটিকে বেছে নিয়েছিলেন বলেও ঘোষণা দেন। যদিও সে সময় তার এই ঘোষণাকে নিয়ে বেশ জল্পনা-কল্পনা হয়েছিল। অনেকে অভিযোগ করেছিলেন যে, দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনার হাশিম আমলা এবং বোলার ইমরান তাহির তাকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে প্রভাবিত করেছেন। তবে সেসময় এই ধারণাটিকে উড়িয়ে দিয়ে ওয়েন পার্নেল বলেছিলেন, যদিও আমি আমার নাম ওয়ালিদ ঠিক করেছি, তবে আমি চাই সকলে আমাকে আমার পূর্বের নামেই ডাকুক।
ইসলাম ধর্ম আমি নিজে গবেষণায় গ্রহণ করেছি। আমি আমার দলের সকল কিছুতে সব সময় এগিয়ে থাকবো। আমার মূল লক্ষ্য থাকবে দলের জন্য সেরাটা দিয়ে খেলা। যেহেতু রোজার সময় চলে আসছে, আমি চাই সকলেই আমার এই সিদ্ধান্তটিকে ইতিবাচকভাবে নিক বা গ্রহণ করুক। আমি একজন পেশাদার ক্রিকেটার এবং আমার জীবনের এ রকম সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো ক্ষমতা ও সৎ সাহস আমার আছে। এই সিদ্ধান্তে দলের কোন সদস্য কিংবা আমাকে কেউ উদ্বুদ্ধ করেননি। আমি নিজেই আমার জন্য ভালোটা বেছে নিয়েছি।
২০১৬ সালে পার্নেল বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ইসলামের বিধিনিষেধ মেনে চলার চেষ্টা করেন। তার ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা যায়, বিদেশ সফরে তিনি এলকোহল ও মাদকদ্রব্য এড়িয়ে চলেন।