সদ্য শেষ হওয়া বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কার মধ্যকার প্রথম টেস্ট ম্যাচে টাইগার ব্যাটারদের ব্যাটিং নিয়ে চারে দিকে হচ্ছে ব্যাপক সমালোচনা। বাজে শট খেলে আউট হয়েছে বাংলাদেশের দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটার লিটন দাস ও শান্ত। তাদের এই ভাবে আউট হওয়াতে বিপদে পড়েছে বাংলাদেশ। আর সিলেট টেস্টের হারের অন্যতম কারণ বাংলাদেশের ব্যাটারদের ব্যাটিং এ্যাপ্রোচ।
এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক আশরাফুল। তিনি বলেন, ‘আসলে আমাদের সময় যা ছিল, অবস্থা তা-ই আছে। আমাদের সময়ও এমন হতো। আপনাকে সামনে আগাতে হলে এর সত্যিকার কারণ খুঁজে বের করতে হবে। এটা কেন হয়, জানতে হবে।’
শান্তর ভুল ধরিয়ে দিয়ে আশরাফুলের পরামর্শ, ‘প্রথম ইনিংসে রান করিনি, সিমিং কন্ডিশন, আমাকে পজিটিভ থাকতে হবে-এই ছিল শান্তর মানসিকতা। কিন্তু পজিটিভ থাকা মানেই যে উইকেটে গিয়েই শট খেলা নয়, তা হয়তো শান্তর মাথায় ছিল না। এখানে রান করতে হলে পিওর হাফ ভলি, ওভার পিচ ডেলিভারির জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আর খুব বেশি শর্ট অফ লেন্থের ডেলিভারি যদি পাওয়া যায়, সেগুলো থেকে সাইড শট খেলে রান করার চিন্তাই ছিল যুুক্তিযুক্ত ও সঠিক কাজ। কিন্তু শান্ত তা করেনি।’
শান্তর আউটের ধরন ব্যাখ্যা করে আশরাফুল বলেন, ‘এখানে গুডলেন্থ বল ভালো বল। মারবেন আউট হবেন। আগের ডেলিভারি দুটি ছিল ইনকামিং। বল অফস্টাম্পের বাইরে থেকে ভেতরে এসেছে। শান্তর ধারণা ছিল এই ডেলিভারিটিও হয়তো ভেতরেই আসবে। কিন্তু সেটা ছিল ক্রস সিমে ফেলা। সেই বল আর ভেতরে আসেনি। বল পরে উল্টে অফস্টাম্পের বাইরে বেরিয়ে গেছে। শান্ত ঠিকমত ঠাউরে উঠতে পারেনি। বুঝতে পারলে অনায়াসে ছেড়ে দিতে পারতো। কিন্তু যেহেতু সে মনে করেছে যে বল ভেতরে আসবে, তাই ব্যাট পেতে দিয়েছিল। বল ব্যাটের বাইরের দিকের কানায় লেগে স্লিপে ক্যাচ উঠে গেছে।’
এদিকে লিটনের আউট হবার ধরন হতাশ করেছে আশরাফুলকেও। তবে তার মনে হয় এটা নিয়ে যত কথা হচ্ছে, ততটা বলা ঠিক নয়। এমনভাবে আউট হবার নজির তার ক্যারিয়ারেও আছে, এমনটা জানিয়ে টেস্ট ক্রিকেটের কনিষ্ঠতম সেঞ্চুরিয়ান বলেন, ‘লিটন যেটা আউট হয়েছে , তার কোনো ব্যাখ্যা নেই। অথচ প্রথম ইনিংসে লিটন অনেক সুন্দর ব্যাটিং করেছে। আউটটা বিট আনলাকি। ভালো বল ছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে ১০০ ওভার কিপিং করে হয়তো সে আশাই করেনি যে ওইদিনই আবার ব্যাটিংয়ে নামতে হবে। এই কারণে তার ব্রেইন আউট ছিল। প্রথম বলে গিয়ে ডাউন দ্য উইকেটে চলে গেছে।’
এমন অনেক সময় হয়, জানিয়ে আশরাফুল বলেন, ‘লিটন যেভাবে আউট হয়েছে, এটা হয়। আমার জীবনেও এভাবে আউট হওয়ার নজির আছে। টাফ সিচুয়েশনে আমিও এমন প্রথম বলে এলোমেলো শট খেলে আউট হয়েছি। এটা কেন হয়? বলে বোঝানো মুশকিল। পরে আমারও মনে হয়েছে, ওই পরিস্থিতিতে উইকেটে গিয়েই অমন শট খেলা উচিত হয়নি। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে অনেক সময় মাথা কাজ করে না। আউট হওয়ার পর মনে হয়।’