তামিম ইকবাল ও বাংলাদেশ দলের মধ্যকার অদৃশ্য দেয়াল কিছুতেই নড়ছে না। অপমানে হঠাৎ অবসর, নাটকীয় প্রত্যাবর্তন এবং অধিনায়ক পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণার পর তিনি এখন জাতীয় দলে একজন ব্রাত্য। কবে তিনি জাতীয় দলে ফিরবেন তা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা। এদিকে টাইগারদের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে তামিমের অবসর ঘোষণা এবং অধিনায়কত্ব নেওয়ার বিষয়ে কথা বলেছেন।
স্পোর্টস সাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তাকে তামিমের সঙ্গে দূরত্বসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। গত বছরের ৬ জুলাই হঠাৎ করে সংবাদ সম্মেলন ডেকে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হোম সিরিজ চলাকালীন অবসরের ঘোষণা দেন দেশ সেরা এই ওপেনার। ঠিক সেই মুহূর্তে কী ঘটেছিল, আগে কিছু না জেনেই জবাব দিলেন হাথুরু। আমি সত্যি বলতে এখনো জানি না কেন তিনি এই সিদ্ধান্ত নিলেন (অবসর নেওয়ার)।
ওই ঘটনার পর তামিমের সঙ্গে কথা বলেননি হাথুরু। বিসিবি এমনকি দুজনের একসঙ্গে বসার ব্যবস্থাও করেনি, কারণ টাইগার কোচ বলেছেন, “তিনি অবসর নিয়েছিলেন এবং সমস্যাটি এমন উচ্চ পর্যায়ে চলে গিয়েছিল যে আমাদের কিছুই করার ছিল না।” এরপর আমার পুরো মনোযোগ টিমের দিকে। আমি সব সময় বলে আসছি- দলের চেয়ে কেউ বড় নয়।
সে সময় আমাকে কেউ কিছু বলেনি। এটা শুধু আমার সিদ্ধান্ত নয়। এটা নেতৃত্ব নির্বাচনের সিদ্ধান্ত। আমরা পারফর্ম করতে পারিনি। পারফর্ম না করে কীভাবে নিজের অবস্থান ধরে রাখবেন? আমরা শুধুমাত্র মেহেদি মেরাজের অবস্থান পরিবর্তন করেছি, কারণ তিনি দৌড়াচ্ছিলেন।
পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ফের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরেন তামিম। যদিও এশিয়ার কাপের আগমুহূর্তে অবসর ঘোষণার মতোই হুট করে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার পাশাপাশি টুর্নামেন্টটি থেকে চোটের কারণে নিজেকে সরিয়ে নেন এই টাইগার ওপেনার। এরপর সাকিব আল হাসানের অধীনে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ খেলেছে বাংলাদেশ। যদিও টুর্নামেন্ট দুটিতে টাইগাররা আশানুরূপ ফল পায়নি। অনেকের মতে, বিশ্বকাপে ভালো করতে না পারার পেছনে তামিমের ঘটনাও ভূমিকা রেখেছে।
এ বিষয়ে প্রায় একই ভাষ্য হাথুরুরও, ‘যদি এরকম (অধিনায়কত্ব বদল) কোনো বড় পরিবর্তন ঘটে, এটি নিঃসন্দেহে প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটাবে। অথচ অন্য দলগুলো তিন বছর ধরে পরিকল্পনা করেছে। বিশ্বকাপের আগে এমন ঘটনা পুরো দলে অবশ্যই কিছু প্রভাব ফেলে। এছাড়া এবাদতের (পেসার এবাদত হোসেন) ইনজুরিও বড় কারণ ছিল। বিশ্বকাপের উইকেটে আমরা তাকে অনেক মিস করেছি।’
অধিনায়কত্ব পরিবর্তনে নিজের কোনো দায় ছিল না বলেও মন্তব্য এই লঙ্কান কোচের, ‘ওই সময়ে আমাকে কেউ কিছু বলেনি। এটি কেবল আমার কোনো সিদ্ধান্তও নয়। এটি নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত। আমরা পারফর্ম করতে পারছিলাম না। কীভাবে পারফর্ম করা ছাড়া আপনি নিজের পজিশন ধরে রাখবেন? আমরা কেবল মেহেদী মিরাজের পজিশন পরিবর্তন করেছি, কারণ সে রান পাচ্ছিল। সবাই তার এশিয়া কাপে করা সেঞ্চুরির কথা ভুলে গেছে। তবে সবমিলিয়ে (বিশ্বকাপে) আমাদের ব্যাটাররা ভালো করতে পারেনি।